This is default featured slide 1 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 2 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 3 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 4 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

This is default featured slide 5 title

Go to Blogger edit html and find these sentences.Now replace these sentences with your own descriptions.This theme is Bloggerized by Lasantha Bandara - Premiumbloggertemplates.com.

Tuesday, November 12, 2019

তুমি অামার


মা-র হাই প্রেসার।ছোটবেলা থেকেই দেখে অাসছি ভারি কাজ কাম তিনি করতে পারেন না।চাপা কল থেকে পানি এনে দেওয়া, রান্নার জন্য পুকুরের পানি সবটা অামি অার বাবাকেই করতে হত।মা শুধু বসে বসে চুল্লিতে রান্না বসাত।ইদানিং শরীরের অবস্হার অারো অবনতি হয়েছে তার।এইতো গত দুইদিন অাগের ঘটনা।রান্না করার সময় হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে বেহুস হয়ে যায়।ভাগ্য ভালো যে অামি তখন ঘরে বসে মোবাইল টিপছিলাম।অাওয়াজ শুনে দৌঁড়ে যাই।তারপর লেবু পাতার ঘ্রাণ শুকিয়ে, মুখে জল ছিটিয়ে প্রায় অাধঘন্টা চেষ্টার পর হুস ফিরে তার।এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না অার।বাবা সিদ্ধান্ত নিলেন অামাকে বিয়ে করাবে।ঘরে নতুন বউ এনে মায়ের কষ্ট লাঘব করাবে।

অামি তখন অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছি।বয়স তেইশের কাছাকাছি।নিজের বিয়ে নিয়ে কখনও ওতটা ভাবিনি।এত তাড়াহুড়োর মধ্যে বাবা অামার জন্য মেয়ে দেখা শুরু করবে সেটাও ভাবিনি।ভেবেছিলাম হুট করে তো অার বিয়ে হয়ে যাবেনা।দুজন দুজনকে চেনার, জানার, বুঝার কিছুটা স্পেস তো নিশ্চয় পাব।দূুর্ভাগ্যবশত সেটাও হয়নি।একরাতে বাবা এসে বলে যে সাতদিন পর অামার বিয়ে।দিনতারিখ সব ঠিক করে এসেছে।মেয়ে তার চেনাজানা, কোন এক বন্ধুর মেয়ে।বাবার কথা শুনে মা খুশি হলেন। অামি চুপচাপ ঠাঁই হয়ে দাঁড়িয়েই রইলাম।মুখ দিয়ে বের হলোনা কোনকিছু অার।


দেখতে দেখতে দুইটা দিন কেটে গেল।অামি বিয়ের জন্য মোটেও প্রস্তুত না।একটা মেয়েকে চিনিনা, জানিনা, কোনদিন দেখিনি পর্যন্ত তার সাথে কিভাবে সারাজীবন পার করব।জানিনা বাবা কেমন মেয়ে ঠিক করেছে অামার জন্য।খুব ইচ্ছে করছে মেয়েটার সাথে দেখা করার, কথা বলার।তারপর দুইজনের সম্মতিতে বিয়ের দিনটাকে পিছিয়ে নেয়ার।বাবার কাছে গিয়ে যে মেয়েটার নাম্বার চেয়ে নিব সেই সাহস অামার নাই।তাছাড়া লজ্জারও একটা বিষয় অাছে।কি না কি মনে করে বসবে অাবার।এসময় একটা বোন থাকলে খুব কাজে অাসত।বোনেরা এ কাজগুলাতে বেশ পটু হয়।কিছু একটার লোভ দেখিয়ে নাম্বার ঠিকই নাম্বার হাতিয়ে নেয়া যেত।

বিয়ের বাকি মাত্র তিনদিন।এখনো হবু বউয়ের নামটা পর্যন্ত জানা হলনা।অাজ সকালে মেয়ের বাপের বাড়ি থেকে কিছু অাসবাবপত্র পাঠিয়েছে।সেগুলা গুছাতে গুছাতে বাপ ছেলে দুইজনেই হাঁপিয়ে গেছি।বুঝায় যাচ্ছে মেয়ের বাবা যথেষ্ট বিত্তশালী। বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম- এসবের কি প্রয়োজন ছিল বাবা? বাবা বলল- অামি বলিনি কিছু দিতে।বলেছিলাম তোর মেয়েটাকে অামার ঘরে পাঠালেই হবে।জোর করেই পাঠাল এসব। অামি অার কিছু বললামনা।রাতে খাওয়ার সময় বাবা বলে উঠল- তোর বন্ধু বান্ধব যাদের যাদের বলার অাছে সবাইকে বলে ফেল।মাঝখানে মাত্র একদিন বাকি।এরপর অার সময় পাবিনা। অামি মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম।

বাড়িতে অাস্তে অাস্তে অাত্মীয়-স্বজন অাসা শুরু হল।অামার পিসি, মাসি, মামা, মামি সবাই একে একে অাসতে থাকল।ছোট ছোট বাচ্চারা এদিক সেদিক খেলছে।পুরো ঘরে একটা গমগম অবস্হা।এইবার মনে হচ্ছে সত্যি সত্যি বাড়িতে বিয়ে নামছে।তবে অামার বিয়ে হচ্ছে সেটা এখনো বিশ্বাসে অানতে পারছিনা।সকাল থেকেই নানা অানুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে অামাকে।নড়া চড়ার সুযোগ পর্যন্ত পাচ্ছিনা।কত হাসিখুশি সবাই।অাড্ডা চলছে রান্নাঘরে।অামি হাসব নাকি কাঁদব কিছুই বুঝতে পারছিনা। সন্ধ্যার পরে বস্ত্রাদি নিয়ে যাবে মেয়ের বাড়িতে।এমন সময় নিশিকে চুপটি করে ডেকে নিলাম।নিশি অামার মামাতো বোন।বললাম- শোন, একটা কাজ করতে পারবি অামার?


– বল কি করতে হবে?
– তোর নতুন বৌদির ফোন নাম্বার….

এটুকু বলতেই সবাই এসে নিশিকে নিয়ে গেল।নিশি বোধয় শুনতেই পাইনি।একটুপর গাড়ি স্টার্ট দেয়ার শব্দ শুনতে পেলাম।দূররর….. এমন কেন হচ্ছে অামার সাথে।অাজ একটা লাস্ট চান্স পেয়েছিলাম সেটাও হাতছাড়া।বুকে ধুকধুকানি শুরু হয়ে গেল হঠাৎ।ঘড়ির কাঁটার প্রতিটা টিকটক শব্দ অামার অস্তিরতা বাড়িয়ে দিচ্ছে যেন।

সেই রাতের পর থেকে সেকেন্ডগুলা যেন মিনিট হল, মিনিট হয়ে গেল ঘন্টা। অস্হির অস্হির লাগছে সবকিছু ঘরে ঠিকছেনা মনটা।শেষ রাতের দিকে চোখদুটো লেগে এসেছিল এমন সময় দরজার তীব্র ঝাকানিতে সেটাও হলনা।রান্নাঘরে মা-র কাছে গিয়ে কিছু খেতে চাইলাম।মা বলে- তোর অাজ উপোস।কিছু খেতে পারবিনা।

– অামার ক্ষুদা পেয়েছে ভীষণ।অামি না খেয়ে থাকতে পারবোনা মা।
– এখনি যদি ক্ষুদা লেগে যায় তোর, তাহলে সারাদিন কিভাবে থাকবি।
– তুমি তো জানোই মা অামি উপোস করতে পারিনা।তাহলে…
– অাচ্ছা ঘরে যা, অামি তোর জন্য খাবার নিয়ে যাচ্ছি।

ঘরে যেতেই নিশি সামনে এসে পড়ল।বলল- কাল কি বলতে চাইছিলি রে তুই?

– কিছুনা।
– ফোন নাম্বার নাকি কি যেন বলছিলি।
– তুই শুনেছিলি তাইলে।
– হ্যাঁ শুনেছিলাম।এরপর নিশি তার হাতে থাকা একটা ছোট্ট সাদা কাগজ অামার দিকে বাড়িয়ে দিতে দিতে বলল- এই নে ধর বৌদির নাম্বার।জমিয়ে কথা বল কেমন? অামি খুশিতে কি করব বুঝে উঠতে পারছিলামনা।নিশির গাল দুটো দুইহাতে টেনে বললাম- থ্যাংকইউ সো মাচ।

– জানিস কত কষ্ট হইছে নাম্বারটা নিতে।বৌদি অামাকে নাম্বার বলেনি।ওর ভাইয়ের কাছ থেকে নিছি।
– ওরে বাপরে….

নিশি যাওয়ার পর অাস্তে করে কাগজটা খুললাম।একবার পরে নিলাম নাম্বারটা ০১৩…. গলা শুকিয়ে অাসছে।অমনি হাত কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেল।নাম্বারটা মোবাইলে তুলে কানের পাশে নিয়ে গেলাম।এমন সময় নাস্তা নিয়ে মা এসে হাজির।অামি কলটা তড়িগড়ি করে কেটে দিলাম।ভাগ্যিস রিং হয়নি তখনো।মা বলল-

– কিরে কাকে কল দিচ্ছিস??
– কাকা…কাউকে না মা।

মা নাস্তা রেখে চলে গেল। অামি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।এরপর অার কল দেয়াই হয়নি।তার অাগেই পাড়ার মোহিনী বৌদি, সুমা বৌদি ওরা এসে অামাকে টেনে নিয়ে গেল।


সন্ধ্যায় অামাকে বরের সাজে সাজানো হল।নানা রকম ফুলে সজ্জিত একটা কারে অামাকে বসানো হল।পাশেই বসেছে মোহিনী বৌদি।তার পাঁচ বছরের ছেলে নির্জন বসেছে ড্রাইভারের পাশে।কারে চড়বে বলে সে কি কান্না তার।শেষমেশ কারে তুলতেই হল।একটা জায়গায় গিয়ে গাড়ি থামল।একে তো ঢোলের শব্দ তার উপর অাতশবাজির অাওয়াজে কানের অবস্হা খারাপ।কাউকে কিছু বলতেও পারছিনা।চারদিক থেকে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ কি অসহ্য বিরক্তিকর। একটা সেলফি নেওয়া উচিত ছিল এসময়।নিজের বিয়ের কথাটা ফেসবুকে জানালে কিছু লাইক কমেন্ট অাসত।

এরপর মেয়েটাকে প্রথমবারের মত দেখি অামাদের শুভদৃষ্টি হওয়ার সময়।কি অপরুপ চাহনি তার যেন নেশার অতলে ডুবছি বারবার।বাবার উপর সাতদিন ধরে জমে থাকা অভিযোগগুলা মুহুর্তেই পানি হয়ে গেল।এরপর সিঁদুরদান, মাল্যদান, সাতপাঁকে বাঁধা, ধর্মীয় সব রীতিনীতি মেনে বিয়ের পালা শেষ হয় অামাদের।মধ্যরাতে অনেকেই খেয়েধেয়ে চলে গিয়েছে।এখন দুই পরিবারের কয়েকজন মাত্র অাছে।ভোরে ভোরে শুরু হল কন্যা বিদায়ের তাড়া।কান্নায় ভেসে যাচ্ছে বাপ, মেয়ে, মা, ভাই।ওদের দেখাদেখি অামারও চোখ ভারি হয়ে অাসল।

অবশেষে এল মহাক্ষন, মহাতিথীর লগন।বহু অপেক্ষিত সেই স্বপ্নের বাসর রাত, ফুলসজ্জার রাত।এ রাতটি নিয়ে কত মানুষের কতরকম ভাবনা।এই রাতটা নিয়ে হাবিজাবি ভাবেনি এমন ছেলেমেয়ে পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া জুড়ি মেলা ভার।মোহিনী বৌদি কিসব উল্টাপাল্টা বলে অামাকে রুমে ঢুকিয়ে দিল।একপ্রকার জোর করেই ঠেলে ঢুকিয়েছে অামাকে।তার অাগে অামার বৌটার সাথে ফিসফিস করে অনেক শলাপরামর্শ করে নিয়েছে।অামি দরজার হুকটা অাস্তে করে উপরে তুলে দিলাম।খাটের চারপাশ ফুলেফুলে সাজানো।তার মাঝখানটাতে বৌ ঘোমটা টেনে বসে অাছে।নাটক সিনেমায় যেমন দেখতাম ঠিক সেরকম।
Share:

Monday, November 11, 2019

ভালবাসার কান্না

-মেয়ে দেখতে সুন্দর। ভাল লাগবে আপনার।
-হুম। তারপর ইলমা ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বলল…
-এইটা মেয়ের পিক।

আমি ওর ফোনে পিক টা দেখে আবার আগের মতোই “হুম” বললাম। এবার ও আমার হাত থেকে আমার ফোনটা কেড়ে নিয়ে একটা নাম্বার লিখে “জানু” নাম দিয়ে সেভ করে বলল…

-আপনার ফোনটা ধরেন। আমি ফোনটা হাতে নিয়ে “জানু” নামের নাম্বারটা ওকে দেখিয়ে বললাম….
-এটা কার নাম্বার?
-মারিয়ার।
-কোন মারিয়া?
-আপনার জন্য যে মেয়েকে ঠিক করেছি সে মেয়েটার নাম মারিয়া।
-তাহলে “জানু” দিয়ে নাম সেভ করলে কেন?
-প্রেমিকাকে আদর করে জানু বলে ডাকতে হয় জানেন না?
-না তো।
-বেশি ঢং করবেন না।
-কখন করলাম?
-সব সময়ই।
-ওহ। আচ্ছা।

এবার মেয়েটার মুখে একটা বিরক্তির ছাপ। মনে হচ্ছে বড্ড বেশি ক্লান্ত হয়ে গেছে। আসলে ঘটনাটা শুরু হয় কাল। ইলমা আমার কাজিন। মানে খালাতো বোন। আমাদের বাসায় আসে প্রায়ই। আর বাসায় এসে আমাকে আড়চোখে দেখে। মাঝে মাঝে হালকা পাতলা কথা বলে। কিন্তু একটু দূরে গেলে লুকোচুরি খেলা শুরু করে দেয়। আমি অবশ্য ব্যাপারটা খেয়াল করেছি। কিন্তু এরকম করার কারন খুঁজে পেলাম না।

ইলমা ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ওকে ছোট বেলা থেকেই আমি অনেক আদর,স্নেহ করি। ছোট বেলায় ইলমা আমার কাছে থাকতে অনেক পছন্দ করতো। এখন তো ও বড় হয়ে গেছে। তাই আগের মতো আচরণ শোভা পায় না। কিন্তু ইলমাকে তুই করে বললে রাগ করে তাই আমি তুমি করেই বলতাম।

আমার পরিচয় টা দেই এবার।অনার্স কমপ্লিট করেছি। কিন্তু কোনো চাকরী করার ইচ্ছা এখন আপাতত নাই। তাই বাসায় বসে বসে বাবার টাকা দিয়ে এমবি কিনে কিনে রাজ্য তৈরী করছি। মানে ক্লাশ অফ ক্লান খেলি। খুব বেশি খেলি না। নেশা হতে দেইনি। আর ফেসবুকে মাঝে মাঝে টুকটাক লেখালেখি করি। ঐদিন ইলমা আমাদের বাসায় আসে। আমি বসে বসে ফেসবুকে গল্প পড়ছিলাম। এমন সময় ইলমা এসে আমার সামনেই সোফায় বসে।আমি বললাম…


-ইলমা কেমন আছো?
-জ্বী ভাইয়া ভালো। আপনি?
-ভাল  ইলমা কি যেন বলতে চাচ্ছে ওর মুখটা দেখেই বুঝতে পারছি। তাই আমি জিজ্ঞাসা করলাম “ইলমা কিছু বলবে?”

-ভাইয়া আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে তাই না?
-না তো। কেন?
-না এমনি। একটু মুচকি হেসে চলে যাচ্ছে। আমি তাই ডাকলাম।
-শুনো।
-জ্বী বলুন।
-একটা কাজ করে দিবে আমার?
-অবশ্যই বলুন। আমি দুষ্টুমি করে বললাম…
-কালকের মধ্যেই আমার জন্য একটা গার্লফ্রেন্ড ঠিক করে দিতে পারবে?
-আসলে ও কথাটা শেষ করার আগেই বললাম…
-ঠিক করে দিবা কথা দিছো।

ও মাথা নেড়ে হ্যা সূচক উত্তর দিয়ে চলে গেলো। আজ সকালে ঘুমাচ্ছিলাম। এমন সময় ইলমা ফোন দিয়ে পার্কে দেখা করতে বলেছে।

-ভাই বাদাম লাগবে?

বাদামওয়ালার ডাকে বাস্তবে ফিরলাম। ইলমা এখনও মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে আছে। বাদাম কিনে বসে আছি। কিন্তু ও খাচ্ছেও না। কোনকিছু বলছে ও না। তাই আমিইই নীরবতা ভেঙ্গে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলাম। তারপর বললাম…

-আমি যাই?

কথাটা বলায় এমন ভাবে তাকালো যেন আমি ওর থেকে কিছু একটা কেড়ে নিয়েছি। চোখ গুলো ছলছল করছে। ঠিক যেন এখনই কেঁদে ফেলবে। অপেক্ষা শুধু চোখের দুটি জোড়া পাপড়ির মিলন। তাহলেই চোখের কোণা দিয়ে মেয়েটার দুঃখ গুলো গড়িয়ে পরবে তার ফর্সা গাল বেয়ে।

-এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? আপনার তো ভাল লাগছে না এখানে। চলে যান। কথাটা কেমন যেন অপরাধবোধ জাগালো মনের মধ্যে। তাই আবার বসে পরলাম।
-ইলমা??

আমার ডাকে সাড়া দিলো না। তাই আর বিরক্ত না করে পকেট থেকে টিস্যুর প্যাকেট টা বের করে এক পিস টিস্যু ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। কিন্তু ও নিলো না। মনে হয় কমদামী তাই। এবার ও উঠে চলে যাচ্ছে। কেঁদেছে মেয়েটা। আমি ডাকলাম। একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরলো। আমি কাছে গিয়ে বললাম…

-চোখ মুছবার জন্য এই কমদামী টিস্যুটাই ভাল।


এবার ও আমার দিকে খুব কঠোর দৃষ্টিতে তাকালো। ওর হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম হাত দুটো শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ করে রেখেছে। মনে হয় আমাকে একটা ঘুষি দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা কাজ করছে ওর মধ্যে। অতঃপর আমার হাত থেকে টিস্যুটা নিয়ে নাক পরিষ্কার করে আবার আমার হাতেই ধরিয়ে দিলো। ও এরকম একটা কাজ করবে ভাবতেই পারিনি। নিশ্চই কোনো মুভি দেখে এ বাজে কাজ টা শিখেছে। আমি সাথে সাথে টিস্যুটা ফেলে দিলাম। বাসায় আসার পর আমি মারিয়া নামের মেয়েটার নাম্বার ডিলেট করে দিয়েছি। কিন্তু ইলমার কান্না করার রহস্য খুঁজে পাচ্ছি না। তাহলে কি ইলমা আমাকে… না না। কি ভাবছি এসব আমি। রাতে শুয়ে আছি। হঠাত মনে হলো ইলমা আমার জন্য এত কষ্ট করে একটা প্রেমিকা ঠিক করলো। প্রেম না করলেও মেয়েটা তো কষ্ট করেছে। ওকে একবার ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন। দুই বার রিং হওয়ার পর রিসিভ করলো।

-হ্যালো ইলমা।
-হুম বলুন।
-তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।
-কেন?
-আমার জন্য এত কষ্ট করে একটা প্রেমিকা ঠিক করে দিলা তাই।
-আর কিছু বলবেন?
-নাহ।
-ভাল। আর কোনদিন আমাকে ফোন দিবেন না। মারিয়ার সাথে জমিয়ে কথা বলবেন। বাই। টুট টুট টুট ফোন টা কেটে দিলো। ও হয়ত ভাবছে মারিয়ার সাথে আমার প্রেমকাহিনী শুরু হয়ে গেছে। আম্মু কি যেন জরুরী কথা বলবে তাই ঘুম থেকে সকাল সকাল টেনে তুলল…

-সাজিদ…
-হুম।
-তোর কাছে ইলমা কে কেমন লাগে। আমি একটু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম…
-ভালই তো। খুব মিশুক।
-আরে আমি ঐ টা জানতে চাইনি।
-কোনটা?
-মেয়ে হিসেবে কেমন?
-ভাল মেয়ে। লেখাপড়া ও তো ঠিকমতো করে। তুমি তো জানই।
-ধুর!! আমি বলছি যে ওর সাথে তোর বিয়ে হলে কেমন হবে? কথাটা শুনে একটু লজ্জিত হলাম। তাই মাথাটা নিচু করে বললাম…
-ওর তো লেখাপড়া শেষ হয়নি।
-তার মানে তোর ভাল লাগে। বিয়ে ফাইনাল। বাঁচালি তুই আমাকে।


আমি কিছু বললাম না। আম্মু চলে গেলো। ইলমা দেখতে শুনতে ভালই।হঠাত করে দেখেই প্রেমে পরার মতো। আম্মু বলছে ইলমা দের বাসায় যেতে। তাই এখন আসলাম। খালামণির সাথে বিয়ে নিয়ে কথা হচ্ছে।

-বাবা সাজিদ তোর উপর আমার ভরসা আছে। আর তোর মা আমাকে অনেক আগেই এটা বলেছিলো। আমি আপার কাছেই আমার মেয়েকে পাঠাবো।
-খালামণি আপনারা যেভাবে বলবেন সেভাবেই হবে।ইলমা কোথায়?
-ওর রুমেই। বস। আমি ডেকে দিচ্ছি।

খালামণি চলে যাওয়ার পর আমি একবার দেয়ালে ইলমার ছবিটার দিকে তাকালাম। দুদিন যাবত ইলমার জন্য আমার কেমন যেন একটা অনুভুতি আসে। ওর হাসিতে, কথা গুলো তে সব কিছুতে প্রেমে পরতে ইচ্ছা করে।

-এ কি আপনি এখানে??

পিছনে তাকিয়ে দেখলাম ইলমা। কিন্তু ও এত অবাক হচ্ছে কেন? আর তাছাড়া আমি তো প্রথমবারের মতো ওদের বাসায় আসিনি। তাই বললাম…

-হুম আমি। কোন সমস্যা?
-হুমম। অনেক সমস্যা। আপনি কেন এখানে আসবেন?
-এমনি বেড়াতে আসলাম।
-এখনি বাসা থেকে বের হয়ে যান বলছি।


কথাটা খুব ধমকের স্বরে বলল ইলমা। বলেই চোখ মুছতে মুছতে ওর রুমে চলে গেলো। আমি বুঝতে পারছিনা ও কেন এরকম ব্যবহার করলো। খালামণিও ব্যাপারটা বুঝতে পারছে না। ওনি আমাকে বলল যে বাবা তুই বস। আমি দেখছি ও কেন এমন করলো।

-কিরে তুই এরকম ব্যবহার করলি কেন সাজিদের সাথে?(খালামণি)
-যা করেছি বেশ করেছি।(ইলমা)
-ও তোর বড় ভাই। যা মাফ চেয়ে আস।

ইলমা কোন উত্তর দিলো না খালামণির কথায়। খাটের উপর বসে কোলে ওর টেডিবিয়ার টাকে জড়িয়ে ধরে অন্যদিকে তাকিয়ে বসে আছে। আমি দরজার পাশে লুকিয়ে ওদের দেখছি। তারপর খালামণি বিরক্ত হয়ে আবার বলল…

-যা মাফ চাইতে।
-না যাবো না। ওনি কেন এসেছে এখানে?
-ওর সাথে তোর বিয়ে ঠিক। কথাটা শুনে মণি হা করে তাকিয়ে আছে ওর আম্মুর দিকে।
-তোর এতে আপত্তি আছে? (খালামণি)
-না না আম্মু। আমার কোন আপত্তি নেই। আমি তো এটাই চাই। এবার খালামণি অবাক হয়ে গেলো ওর কান্ড দেখে। আমিও লজ্জাবোধ করলাম। কারন ও মেয়ে হয়ে লজ্জা পেলো না অথচ আমি লজ্জায় কথা বলতে পারছিলাম না। মেয়ের লজ্জাশরমের অভাব দেখে খালামণি বলল…


– তোর কি লজ্জাশরম নেই? এভাবে বলে কেউ?
-ধ্যাত। তুমি বাদ দাও। এখন কি করবো বলো। ওনাকে কিভাবে অপমান করলাম। এখন যদি বিয়ে করতে না চায়?? আমার কি হবে???

-এবার আমি কিছু জানি না। তুই দেখ কি করতে পারিস।

খালামণি দরজার দিকে আসছে দেখে আমি দৌড়ে আমার জায়গাতে গিয়ে বসে পরলাম। একটু পর ইলমা আসলো। একটা লাল রঙের শাড়ি পরে। খুব তাড়াতাড়ি করে সেজেছে বুঝা যাচ্ছে।

-এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?

আমি ওর দিক থেকে চোখ নামিয়ে মুখে একটু অভিমানের ভাব নিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে ফেললাম। কিন্তু কোন কথা বললাম না। তারপর ও একটু রেগে বলল…

-ভাব ধরবেন না একদম।
-আমি আবার ভাব ধরলাম কই?
-সব সময়ই। চলেন।
-কোথায়?
-ঘুরবো।
-ওহ।
-দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আসুন।
-খালামণিকে বলে যাই।
-লাগবে না। আসুন তো। ও আমার হাত টা ধরে টেনে বের করে নিয়ে গেলো।
-বাবা কান্না করে না। তোমার আম্মু এখনি এসে পরবে। ইলমা তাড়াতাড়ি আসো। আমার মেয়েটা কাঁদছে।
-আসতেছি তো। একটু দাঁড়াও।
-আচ্ছা আসো।

তিন বছর হয়েছে আমাদের বিয়ে হয়েছে। একটা মিষ্টি মেয়েও আছে। নাম দিশা। দোয়া করবেন সবাই।
Share:

Message Us

Unordered List

Support